বহুদিন আগের কথা। তখন খুবই ছোট। ক্লাস টু কিম্বা থ্রিতে পড়ি। আমাদের বাড়ির পুরানো টিভির বদলে একটা নতুন টিভি কেনা হয়েছিল। তাছাড়া আগের টিভিটা এমনিতেই খারাপ হয়ে গেছিল। নতুন টিভি আসতেই আমার আর আনন্দ ধরে না। আগের টিভিটায় অনেক কম চ্যানেল আসত। এটায় অনেক বেশি। তখনও ডিশ বা সেটটপ বক্সের যুগ আসেনি। ফলত আজকের মত হাজারখানা চ্যানেল ছিল না, কিন্তু যা আসত তা অনেক। ধীরে ধীরে ডিসনি, পোগো, কার্টুন নেটওয়ার্কের সাথে পরিচয় হয়েছিল। খুলে গেছিল এক অবাক দুনিয়া।
যারা নব্বইয়ের দশকের শেষভাগে জন্মেছে তারা ব্যাপারটা ভাল বুঝবে। আসলে মুক্ত অর্থনীতির হাওয়া আর প্রযুক্তি বিপ্লবের ছোঁয়া সবে লাগতে শুরু করেছে আমাদের দেশে। টেলিভিশন ছিল তখন প্রধান বিনোদন। তো সেই কল্পনার দুনিয়ায় চিরকালীন টম অ্যান্ড জেরি ছাড়াও আরও এমন অনেক কার্টুন ছিল যা আজ আর সেরকম দেখতে পাওয়া যায় না। এর মধ্যে ছিল অসওয়াল্ড, নডি।
যারা নব্বইয়ের দশকের শেষভাগে জন্মেছে তারা ব্যাপারটা ভাল বুঝবে। আসলে মুক্ত অর্থনীতির হাওয়া আর প্রযুক্তি বিপ্লবের ছোঁয়া সবে লাগতে শুরু করেছে আমাদের দেশে। টেলিভিশন ছিল তখন প্রধান বিনোদন। তো সেই কল্পনার দুনিয়ায় চিরকালীন টম অ্যান্ড জেরি ছাড়াও আরও এমন অনেক কার্টুন ছিল যা আজ আর সেরকম দেখতে পাওয়া যায় না। এর মধ্যে ছিল অসওয়াল্ড, নডি।
মনে আছে একদিন ডিসনি দেখতে দেখতে একটা কার্টুনের সন্ধান পাই। আগে অ্যাড দেখাতো দেখতাম, কিন্তু তার আগে কোনদিন দেখা হয়ে ওঠেনি। গল্পটা বেশ অদ্ভুত, একটা বাচ্চা ছেলে সে খালি সমস্যায় পড়ে, সে দুর্বল। আর তাকে সাহায্য করে এক ভবিষ্যতের এক রোবট। হ্যাঁ ঠিকই ধরেছেন ডোরেমন। কেন জানিনা অল্পদিনের মধ্যেই কার্টুনটা বেশ পছন্দের হয়ে উঠেছিল। হয়তো কোথাও আমরাও নিজেদের জীবনে নবিতার মতোই। হ্যাঁ হয়তো আমরা ওর মতো অতটা বোকা নই, কিন্তু কোথাও আমরাও নিজেকে অনেকটা অসহায় মনে করি। সত্যি যদি এই রকম কেউ একটা ত্রাতা থাকত। আজ জানি এটা সম্ভব নয়, কিন্তু ভাবতে বড় ভাল লাগে। হয়তো আমাদের প্রত্যেকের জীবনের অপূর্ণ স্বাদগুলো পূরণ করতে এই রকম একটা কেউ এলে ভাল হত। সত্যিই তো কত স্বাদ অপূর্ণ থেকে যায়। অনেক সময় সেগুলো চাপা পড়ে যায় কিম্বা জীবনে চলেতে গেলে চাপা দিয়ে রাখতে হয়। হয়তো সে ইচ্ছা গুলো বড় তুচ্ছ, কিন্তু সেই মুহূর্তে ওগুলোই ছিল সোনার চেয়ে দামি। আর কোনদিন হয়তো সেগুলো পূরণ হবেনা। কত অপূর্ণ স্বাদ মনে পড়ে, সেই সুন্দর দেখতে রঙ পেন্সিলের বাক্স বা সেই মজার কমিক্সটা, দোকানে দেখেছিলাম, কিন্তু কোন কারণে কেনা আর হয়নি। আজও থেকে যায় অনেক ইচ্ছা মনের গভীর স্থানে। কোন এইরকম বন্ধু পেলে হত যে পূরণ করতো এইসব ইচ্ছা। আজও বড় হয়ে মনে হয়, ওই দিন গুলোতে ফিরে যাই। যদি পেতাম ডোরেমনের টাইম মেশিনটা।
জীবনের সমস্যায় আজও পড়ি, ভবিষ্যতেও পড়ব। কিন্তু সে সমস্যা থেকে মনে মনে একটু হাঁপ ছেড়ে বাঁচা যায়, যখন সেই ছোট বেলার স্মৃতিগুলো মনে পড়ে। আসলে আমরা প্রতেকেই বাঁচি সেই শৈশব স্মৃতির অন্বেষণ করে। এই শৈশব স্মৃতিটায় হয়তো ডোরেমন, যা ক্ষণিকের জন্য হলেও বাস্তবটাকে ভুলিয়ে মনটাকে ভাল রাখে, শক্তি যোগায় আবার নতুন করে কাজে ঝাঁপানোর। ডোরেমন কোনদিন হারতে শেখায়নি। শত বিপদের মধ্যেও নবিতাকে সে বাঁচতে শিখিয়েছে। আমাদের দেশ ভারতবর্ষ, অমর্ত্য সেন বলেছেন ফার্স্ট বয়দের দেশ। যেখানে সব রোশনাই ফার্স্ট বয়দের নিয়ে। তারা বড় ইন্সটিটিউশনে পড়বে, সম্মান পাবে, আর শিক্ষান্তে যাদের অধিকাংশ দেশ ছাড়বে কারণ এখানে সেরকম প্রস্পেক্ট নেই। কিন্তু এদেশে পড়ে থাকবে নবিতারাই। যারা পিছিয়ে পড়েছিল কিন্তু হারেনি। তাদের নিয়ে কেউ সেলিব্রেট করেনি, তবুও তারা আছে। আর তাদের জন্য আছে ডোরেমনরা আশা ভরসা যোগাবে তাদের।
জীবনের সমস্যায় আজও পড়ি, ভবিষ্যতেও পড়ব। কিন্তু সে সমস্যা থেকে মনে মনে একটু হাঁপ ছেড়ে বাঁচা যায়, যখন সেই ছোট বেলার স্মৃতিগুলো মনে পড়ে। আসলে আমরা প্রতেকেই বাঁচি সেই শৈশব স্মৃতির অন্বেষণ করে। এই শৈশব স্মৃতিটায় হয়তো ডোরেমন, যা ক্ষণিকের জন্য হলেও বাস্তবটাকে ভুলিয়ে মনটাকে ভাল রাখে, শক্তি যোগায় আবার নতুন করে কাজে ঝাঁপানোর। ডোরেমন কোনদিন হারতে শেখায়নি। শত বিপদের মধ্যেও নবিতাকে সে বাঁচতে শিখিয়েছে। আমাদের দেশ ভারতবর্ষ, অমর্ত্য সেন বলেছেন ফার্স্ট বয়দের দেশ। যেখানে সব রোশনাই ফার্স্ট বয়দের নিয়ে। তারা বড় ইন্সটিটিউশনে পড়বে, সম্মান পাবে, আর শিক্ষান্তে যাদের অধিকাংশ দেশ ছাড়বে কারণ এখানে সেরকম প্রস্পেক্ট নেই। কিন্তু এদেশে পড়ে থাকবে নবিতারাই। যারা পিছিয়ে পড়েছিল কিন্তু হারেনি। তাদের নিয়ে কেউ সেলিব্রেট করেনি, তবুও তারা আছে। আর তাদের জন্য আছে ডোরেমনরা আশা ভরসা যোগাবে তাদের।
তাই আজও ঘুমের মধ্যে কেঁদে উঠি এই বলে - যে আমার ডোরেমন চাই।
আর মন বলে এই তো আমি, কেন কাঁদ বন্ধু আমি তো ছেড়ে যায়নি। আমরা এক সাথে ভবিষ্যতটা দেখব। একসাথে হাসব। এই তো আমি।
সত্যি এই জন্যই আমার ডোরেমন চাই।
আর মন বলে এই তো আমি, কেন কাঁদ বন্ধু আমি তো ছেড়ে যায়নি। আমরা এক সাথে ভবিষ্যতটা দেখব। একসাথে হাসব। এই তো আমি।
সত্যি এই জন্যই আমার ডোরেমন চাই।
শুধু ডোরেমন ই নয়,এরকম লেখাও আরো চাই❤️
ReplyDeleteহুম, তোর ডোরেমন চাই। কিন্তু ডোরেমন কেবল শিশুমনকেই তুষ্ট করে, বালকমনকে নয়, কারণ নবিতার দৃষ্টিভঙ্গিতে ডোরেমন কেবল ত্রাতা বা বন্ধু নয়, নৈতিকতার শিক্ষকও বটে। কিন্তু, জীবনে নৈতিকতায় সবকিছু হয় না, অনেকক্ষেত্রে ডোরেমনকে উপেক্ষা করে সিদ্ধান্ত নিতে হয়, তাতে হয়তো সুনিওর মতো প্রতিপত্তি বা ডেকিসুগির মতো মেধা দুটোই পাওয়া সম্ভব। কারণ, অ্যানিমেশনের প্রতিপদেই দেখা যায় যে ডোরেমনের জন্যই নবিতা অনেক কিছু শিখতে পারেনি। তাই, আমার মতে ডোরেমনকে না চেয়ে ডেকিসুগির জেদ আর উদ্যমকেই চাওয়া উচিত।
ReplyDeleteদিপ্তাংশু এখানে আমি বাস্তবের কথা খুব একটা বলিনি। এটা কল্পনার জগৎ।
Deleteআমাদের ভারতীয় 'হিট' সিনেমা গুলোতে খুব একটা লজিক থাকে না। তবুও সেগুলোই হিট হয়, লোকে হল ভর্তি করে দেখতে যায়। কেন ? কি দরকার তার? আসলে রোজকার দৈনন্দিন জীবনের একঘেয়েমির মাঝে একটু মুক্তি দেয় ওগুলো মানুষকে। আর সেখানেই শিল্পের সার্থকতা।
ছোটবেলার স্মৃতি গুলো এভাবেই পিছনে ফিরে ডাকে। এগুলোই জীবনে লড়তে সাহায্য করে। আর যদি ব্যক্তিগত ভাবে জানতে চাস তো বলব, ডেকিসুগির জেদ ভাল। কিন্তু তা সব সময় সাহায্য করে না। কারণ ডেকিসুগি খানিকটা আদর্শের মতো। নবিতা আসলে ডেকিসুগি হতে চায় কিন্তু পারেনা। যদি সত্যি সত্যি কোনদিন নবিতা ডেকিসুগি হয়ে যেত তাহলে সে আর বাঁচতে পারত না। কারণ জীবনে বাস্তবতা দিয়ে অনেক কিছু হয় বটে কিন্তু সব কিছু নয়। কল্পনা জীবনে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে। আর একটা কথা মনে রাখিস, বাস্তব হল কল্পনার বিরুদ্ধে এক ষড়যন্ত্র, তাকে বিশ্বাস না করাই ভাল।